শীতের আগমনে রূপগঞ্জে লেপ-তোষক তৈরির ধুম

শীতের আগমনে রূপগঞ্জে লেপ-তোষক তৈরির ধুম

নজরুল ইসলাম লিখন, রূপগঞ্জ ঃ

 

শীতের এখনও বেশ বাকি। তারপরও আবহাওয়ার কারণে একটু আধটু ঠান্ডা পড়তে শুরু করেছে। সন্ধ্যায় ও শেষ রাতের দিকে ঠান্ডা ঠান্ডা আবহাওয়া বিরাজ করতে গ্রাম অঞ্চলগুলোতে। গ্রামের অলিগলিতে ধনুকরের  (লেপ তোষক কারিগর) সুরের ধ্বনি আছড়ে পড়ছে। বানাই লেপ তোষক, বানাই লেপ তোষক বলে ডাক হাঁকতে থাকেন রাস্তায়, বাসা বাড়ির পাশে। কুলবধুরা দৌড়ে আসেন, ধনুকরদের সাথে দামদও করেন, শীতের আগাম প্রস্তুতি নিতে লেপ তোষক বানাচ্ছেন। গৃহবধুরা জানান, এবার দাম অনেক বেশি হাঁকছেন কারিগররা। তেপ তোষকের কারিগর ধনুকররা জানান, সব জিনিষের দামই বেশি । কিনতে হয় বেশি দামে। আমাগো কিছু করার নাই।
নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ উপজেলার সর্বত্রই গত কয়েক দিন থেকে একটু একটু করে শীত আসতে শুরু করেছে। শীতের আগমনে এলাকার প্রত্যন্ত এলাকায় লেপ-তোশক তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন কারিগররা। এবার একটু আগে থেকেই শীত নামতে শুরু করেছে। আগাম শীতে ধুনকর আর লেপ-তোশকের ব্যবসায়ীরা বেজায় খুশি। রূপগঞ্জের  বিভিন্ন হাট বাজার ও দোকানে ব্যবসায়ীরা বিক্রির জন্য লেপ-তোশক মওজুদ করে রেখেছেন।  শীতের কারণে বিক্রি বেড়ে যাওয়ায় বেজায় খুশি ধুনকর আর গরম কাপড় ব্যবসায়ীরা। লোকজন নিজের ও পরিবারের সদস্যদের জন্য সাধ্যমতো লেপ-তোষক সংগ্রহ করছেন।
অপরদিকে ছিন্নমূল পরিবারের মহিলারা পুরান শাড়ি, লুঙ্গি দিয়ে কাঁথা তৈরি করে চলেছেন। তাদেরও লেপ- তোষকের স্বাদ থাকলেও অনেকের সাধ্য না থাকায় তারা রং-বেরঙের সুতা দিয়ে কাঁথা বুনে চলেছেন। গরম কাপড় তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে উঠেছে ধুনকর (লেপ-তোষক তৈরির) কারিগররা। লেপ-তোষক তৈরির অগ্রিম বায়না নিচ্ছে তারা।
কিন্তু আমদানির পরিমাণ কম থাকায় ও মূল্য বেশি হওয়ায় ক্রেতারা বিমুখ হয়ে ফেরত যাচ্ছে। নগর পাড়া বাজারে কথা হয় লেপ-তোষক কিনতে আসা নূরুল হক মিয়ার সাথে। তিনি জানান, তুলা, কাপড় ও কারিগরের মুজুরি বেশি হওয়ায় দুইটার স্থলে একটা বানিয়ে নিলাম।
এদিকে খোলাবাজারে লেপ-তোষক তৈরির তুলার দামও ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। রূপগঞ্জ উপজেলার হাট-বাজারের অধিকাংশ কারিগররা লেপ-তোষক তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে উঠেছেন। উপজেলার চনপাড়া বটতলা বাজারের দোকানদার পরিমল সরকার জানান, শীত আসতে শুরু করেছে। লেপ-তোষক তৈরির অর্ডারও পাচ্ছি ভাল। মনে হয় এবছর ব্যবসা ভালই হবে।
তারাব এলাকার লেপ-তোষকের দোকানদার আসিফ ও তার কারিগর আতিক জানান, শীত আসার আগেই মানুষ লেপ-তোষক বানাতে শুরু করে দিয়েছে। আমরাও ব্যস্ত সময় পার করছি। শীত বাড়ার সাথে সাথে ব্যবসা আরো বুদ্দি পাবে। মনে হয় এবছর আয় রোজগার ভালই হবে। তবে জিনিষপত্রের দাম বেশি হওয়ায় তাদেও ইচ্ছমতো লেপ-তোষক বানাতে পারছেন না। পুঁজি স্বল্পতার কারণে বেশি মাল তৈরি করতে পারছি না। তাদের মতে, সরকারি বেসরকারি সংস্থা থেকে আর্থিক সহযোগিতা পেলে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে তৈরিকৃত মালামাল সরবরাহ করা যেত।

 

 

আপনি আরও পড়তে পারেন